সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৫০ অপরাহ্ন

News Headline :
মানববন্ধনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন শ্যামনগরে গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে সড়কে ভ্যান চালকের মৃত্যু রাজশাহীর মোহনপুরে মদ পানে ৩ জনের মৃত্যু, গ্রেফতার ২ রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সাতটি থানার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা যানজট নিরসন দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে আরএমপি’র মতবিনিময় সভা শ্যামনগরে এবার কৃষকরা আমন ধানের আশানুরুপ ফলন পেয়েছে পাবনায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ জন নিহত ১জন আহত শাজাহানপুরে বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে ছাত্রদলের দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত মান্দায় বিল উন্মুক্তের দাবিতে জেলেদের সংবাদ সম্মেলন সভাপতির স্বৈরাচারী আচরন স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতিতে পাবনা শহর সমাজ সেবা কার্যালয়ের কার্যক্রম স্থবির

নদীর পাড়ে ছড়িয়ে পড়ছে রাসেলস ভাইপার,মৃত্যুহার দ্বিগুণ

Reading Time: 2 minutes

মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী:
দেশের উত্তরাঞ্চলে রাসেলস ভাইপারে মৃত্যু সংখ্যা বেশি। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাসেলস ভাইপারের কামড়ে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহীর রোগী সবচেয়ে বেশি। এরপরে রয়েছে নওগাঁ, পাবনা ও কুষ্টিয়ার রোগী।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ৬ বছরের পরিসংখ্যানে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। ২০১৮ সালে রাসেলস ভাইপারের কামড়ে আহত ২১ জন ভর্তি হন। তাদের মধ্যে আটজন মারা যান। ২০১৯ সালে ২৮ জনের মধ্যে আটজন মারা যান। ২০২০ সালে ৩৫ জনের মধ্যে ১৩ জন মারা যান। ২০২১ সালে ৩৭ জনের মধ্যে ১০ জন মারা যান। ২০২২ সালে ৩১ জনের মধ্যে ১০ জন মারা গেছেন। ২০২৩ সালে এখন পর্যন্ত ১৪ জনের মধ্যে পাঁচজন মারা গেছেন। এ হিসাবে মৃত্যুহার প্রায় ৩০ শতাংশ। যা অন্যসব বিষধর সাপের কামড়ে মৃত্যুহারের তুলনায় দ্বিগুণ। জানা গেছে, রাসেল ভাইপারের কামড়ে আহতদের চিকিৎসায় দক্ষ চিকিৎসক রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক চিকিৎসক ড. আবু শাহীন। বর্তমানে নওগাঁ মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ড. আবু শাহীন জানান, এন্টিভেনম দেওয়ার পরও রাসেলস ভাইপার বা চন্দ্রাবোড়া সাপের কামড়ে আক্রান্ত প্রায় ৩০ ভাগ মানুষ মারা যাচ্ছেন। গোখরা বা কালাচের ক্ষেত্রে মৃত্যুহার ১০-১৫ ভাগ। রাসেলস ভাইপার নতুন নতুন প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। এর উত্তর আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। রাসেলস ভাইপারের কামড়ে মৃত্যু কেন বেশি-জানতে চাইলে ড. আবু শাহীন বলেন, এর বিষ মানুষের শরীরের রক্ত, কিডনি, মাংসপেশি, স্নায়ুতন্ত্রে একাধারে সমস্যা করে। বেশি মৃত্যুর প্রধান কারণ দেরি করে হাসপাতালে ভর্তি এবং দেরি করে এন্টিভেনম দেওয়া। দেখা যায়-সাপ কামড়েছে সকালে, অথচ দেরি করে হাসপাতালে আনা হয়েছে; এন্টিভেনম দিতে বিকাল হয়ে গেছে। ততক্ষণে বিষ কিডনির ক্ষতি করে ফেলেছে। এ কারণে এন্টিভেনম দেওয়ার পরও মৃত্যু ঠেকানো যাচ্ছে না। রক্তের বিষ নির্বিষ (নিউট্রালাইজ) করতে পারলেও টিস্যুর বিষ নির্বিষ করতে পারি না। তখন ডায়ালিসিসে যেতে হয়।ড. আবু শাহীন বলেন, রাসেলস ভাইপার-সহ বিষধর সাপে কামড়ের পর শরীরে উপসর্গ দেখা দেওয়ামাত্র দ্রæততম সময়ের মধ্যে এন্টিভেনম দিতে হবে। তাড়াতাড়ি এন্টিভেনম দিলে জটিলতা কম হয় এবং মৃত্যুর সম্ভাবনাও কমে আসে।দেশে রাসেলস ভাইপারের বিস্তৃতি নিয়ে রাজশাহীর সাপ বিশেষজ্ঞ বোরহান বিশ্বাস রোমন গবেষণা করছেন। তিনি বলেন, একটি কথা বলা হয়-রাসেলস ভাইপার বাংলাদেশে বিলুপ্ত ছিল। এটি সঠিক মনে করি না। দেশে আসলে রাসেল ভাইপার টিকে ছিল। কেউ বিষয়টি সার্ভে করেনি। আর নতুন করে এসেছে নদীপথে। তিনি বলেন, ২০০৯ সালে বাংলাদেশের বরেন্দ্র অঞ্চলে রাসেলস ভাইপার পুনরায় প্রথম পাওয়া যায়। ২০১০ সালে চাঁপাইনবাগঞ্জে যেখানে পদ্মা নদীর শুরু সেখানে, ২০১১ সালে রাজশাহী শহরের কাছাকাছি (৫০-৬০ কিলোমিটারের ভেতরে) এবং ২০১২ সালে রাজশাহী ও নাটোরের মাঝামাঝি গোপালপুর-লালপুরে রাসেলস ভাইপার পাওয়া যায়। ২০১৩ সালে ঈশ্বরদীর রূপপুরে, ২০১৪ সালে গড়াই নদী এবং ২০১৫ সালে চরভদ্রাসনে পাওয়া যায়। চাঁদপুর পর্যন্ত এ সাপ ছড়িয়ে গেছে। যেতে যেতে কেমন বংশবৃদ্ধি করছে তা জানা দরকার।বোরহান বিশ্বাস রোমন বলেন, নদী অববাহিকা, চরাঞ্চল এবং বরেন্দ্র অঞ্চলে রাসেলস ভাইপারের মূল বসবাস। তাই এসব জায়গায় সচেতনতা বাড়াতে হবে। কৃষি জমিতে কাজের সময় গামবুট ব্যবহার করতে হবে। ধান কাটার সময় যান্ত্রিক সুবিধা নিতে হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Design & Developed BY Hostitbd.Com